জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::
টেকনাফ উপজেলা সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। তবে বর্তমানে অনুপ্রবেশের সংখ্যাটা কিছুটা কমগেছে। সোমবার ভোর ও সকালে উপজেলার চার সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে প্রায় পাচঁ শতাধিকের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। তবে নারী ও শিশুদের সংক্যাটা বেশি। পয়েন্টগুলো হচ্ছে-শাহপরীর দ্বীপ, লম্বাবিল, হ্নীলা ও খারাংখালী।
তবে টেকনাফ উপজেলায় এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক। তিনি বলেন, এছাড়া সোমবার ভোরেও প্রায় ৩ শতাধিকের অধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। আগের তুলানায় রোহিঙ্গা প্রবেশটা কিছুটা কমেছে।
গত রবিবার শাহপরী দ্বীপ দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে মো. আয়ুব (৪৫) নামে এক রোহিঙ্গা। তিনি জানালেন, মিয়ানমারের বুচিডং (বুথেডং) টাউনশিপ টাইম্ম্যাখালী গ্রামে তার বাড়ি। তিনি ১০ দিন পায়ে হেঁটে মিয়ানমার সীমান্তে চরে ডংখালী নামক এলাকায় পৌছেন। সেখানে প্রায় তিন হাজারের মত রোহিঙ্গা রয়েছে , তারা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষামান রয়েছে। সময় সুযোগ বুঝে এপারে ঢুকবেন।
তিনি বলেন, আবারো নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে গিয়ে হুমকি ধমকি দিচ্ছে সেনাবাহিনী। তাছাড়া ঘর থেকে কাউকে বেল হতে দিচ্ছেনা। লোকজনকে জোর করে (এনপিসি) কার্ড রোহিঙ্গাদের ধরিয়ে দিচ্ছে। যারা নিতে অস্বকৃতি জানাচ্ছে তাদের হত্যা করা হুমকিও দিচ্ছে। এতে অনেক এ কার্ড নিয়েছে। যেখানে বলা আছে অবৈধ ‘বাঙ্গালি’। রবিবার রাতে আমাদের পরিবারে ১২ জন সদস্য ডেংগি নৌকা নিয়ে শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর নামক এলাকা দিয়ে এপারে প্রবেশ করি।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী ও রাখাইনারা যেসব গ্রামে এখনো রোহিঙ্গা অবস্থান করছে তাদেরকে বর্মী ভাষায় লেখা ‘বাঙালি কার্ড’ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। কেউ তা নিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করছেন। এ কারণে রোহিঙ্গা দলে দলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন।
সাবরাং হারিয়াখালী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটিদল দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। দলের প্রধান কর্মকর্তা লে. মেহেদী পিয়াস বলেন, সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অনুপ্রবেশকারি কিছু রোহিঙ্গাদের ট্রাক ও জীপে করে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারিদের ডাল, চিরা, বিস্কুট, শিশুদের জন্য দুধ, কাপড় দেওয়া হচ্ছে এবং সরকারি-বেসরকারি সংগঠনগুলো চিকিৎসাও দিচ্ছে তাদের।
টেকনাফ-২ বিজিবি’র পরিচালক অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন রবিবার রাতে শাহ পরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়া ও ঘোলা পাড়া পয়ন্ট দিয়ে ২৯ পুরুষ,২৯ নারী ও ৫৩ জন শিশু অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশে ডুকে। তাদেরকে সোমবার বিকালের সাবরাং হারিয়াখালী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত: